
বিশেষ প্রতিবেদক: | শনিবার, ০৮ মার্চ ২০২৫ | প্রিন্ট | 25 বার পঠিত
শেয়ারবাজারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চার গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। বিএসইসির গঠিত পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনে এমনই তথ্য উঠে এসেছে।
শেয়ারবাজারে সংঘটিত ১২টি অনিয়মের বিষয়ে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ইতিমধ্যে ওই তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। যেখানে দুর্নীতি ও অনিয়মের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্যাপিটাল রেইজিং ইস্যু (আইপিও), মিউচুয়াল ফান্ড, এনফোর্সমেন্ট এবং সুপারভিশন অ্যান্ড রেগুলেশনস অব ইস্যুয়ার কোম্পানিজ (এসআরআইসি) বিভাগের কর্মকর্তারা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় দুর্নীতিতে জড়িত। তদন্ত কমিটি তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করলেও এখনও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা এবং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে বিএসইসি কর্তৃপক্ষের উপর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, কমিশনের ভিতরের শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কারণে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের এক পরিচালক বলেন, কমিশন যদি স্বচ্ছ হতে চায়, তবে প্রতিবেদন প্রকাশ করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নইলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও কমবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইপিও অনুমোদন প্রক্রিয়ায় স্বল্পমূল্যের কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে শেয়ারবাজারে অনিয়মিত প্রবেশের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। মিউচুয়াল ফান্ড পরিচালনায়ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এনফোর্সমেন্ট বিভাগের কর্মকর্তারা শেয়ারবাজারে কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাদের আড়াল করতে চেষ্টা করেছেন। এছাড়া এসআরআইসি বিভাগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষার জন্য নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে।
বিএসইসিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কারণ ২০ জনের বেশি কর্মকর্তাকে শোকজ করা হলেও এখনো বড় কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই পরিস্থিতি কমিশনের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠাচ্ছে। কমিশন চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের সম্পর্ক বর্তমানে উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে, যা বড় ধরনের আন্দোলনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।
এছাড়া, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং সাবেক কমিশনার শেখ সামসুদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে এবং তাঁদের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে।
যদি এই দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও কমে যাবে এবং ভবিষ্যতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হবে। বর্তমানে বিএসইসি একটি সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে এবং এখন দেখার বিষয় হলো, কমিশন কতটুকু স্বচ্ছতা প্রদর্শন করতে পারে এবং তার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হয়।তবে বিএসইসি’র বর্তমান চেয়ারম্যানের শেয়ারবাজার বিষয়ে দক্ষতা ও পরিপক্কতা নিয়েও সংশ্লিষ্টরা প্রশ্ন তুলছেন।
Posted ৩:৫৯ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৮ মার্চ ২০২৫
bankbimaarthonity.com | saed khan